বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০১৪

সার্ভাইভ জানুন-২


বাসস্থানঃ-
বনে-জঙ্গলে সার্ভাইভ অথবা ক্যাম্পিং করার সময় থাকার জায়গাটা আপনাকে খুব ভালো ভাবে নির্বাচন করে নিতে হবে। আপনি এমন একটি স্থান র্নিবাচন করতে পারেন যেখান থেকে খাবার ও পানি বিশেষ করে পানিটা যেন খুব সহজেই পেতে পারেন। জঙ্গলে আদ্রতার পরিমান খুব বেশি থাকে তাই অল্প পরিশ্রমেই আপনি খুব তাড়াতাড়ি ডি-হাইড্রেড হয়ে পরবেন। আপনাকে জঙ্গলে প্রতি ঘন্টায় প্রায় দুই লিটার পানি খেতে হবে নিজেকে হাইড্রেড রাখার জন্য কারন খাবার ছাড়া আমরা ১৪ দিন বাঁচতে পারি কিন্তু পানি ছাড়া আমার ১ সপ্তাহ ও বাঁচবো না। এ কারনেই থাকার জায়গাটা পানির কাছা কাছি হলে ভালো। যাইহোক, যদি আপনার সাথে তাবু থাকে তাহলে থাকাটা খুব একটা সমস্যা হবে না। শুধু এটা দেখবেন আপনার থাকার জায়গাটা যেন জন্তু জানোয়ারের চলার পথে না হয় আর জায়গাটা যেন পরিষ্কার থাকে। তাবুর বদলে আপনার কাছে যদি “হ্যামক” (দোলনার মত এক ধরনের বিছানা) থাকে তবে তা পাশাপাশি ২টা গাছের সাথে বেঁধে ঝুলিয়ে নিন। অনেক হ্যামকের সাথে মশারীও থাকে তাই আপনার যদি এ সুবিধা না থাকে তবে সাথে কীটনাষক নিতে ভুলবেন না। ঘুমানোর আগে শুধু তা হ্যামকের দড়ি গুুলোয় মেখে নিবেন তাহলে পোকা-মাকড় দড়ি বেয়ে আপনার উপর উঠতে পারবে না। তবে আপনি যদি পূর্বে হ্যামকে অভ্য¯ ’ না থাকেন তবে আপনাকে একটু সাবধানে তাতে অভ্যস্থ হতে শিখে নিতে হবে। হ্যামকের সম্পুর্ন ব্যালেন্স টা থাকে চারটি দড়ির উপর তাই আপনি যদি ব্যালেন্স ঠিক রাখতে না পারেন তবে রাত-বিরাতে ঘুমের মাঝে হুমরী খেয়ে আপনাকে মাটিতে আছড়ে পরতে হতে পারে। যদি একান্তই আপনার কাছে তাবু বা হ্যামক কোনটাই না থাকে তবে নানা রকমের টুকিটাকি জিনিস দিয়ে আপনাকেই একটা থাকার মত কুঁড়ে বানিয়ে নিতে হবে একটু বুদ্ধি খাটালেই আপনি নিজেই তা তৈরী করে নিতে পারবেন আর এটা খুবই জরুরী কারন জঙ্গলে রাত কাটানোর সময় মাথার উপরে থাকা একটা ছাদ আর সামনে জ্বলতে থাকা একটু আগুন আপনার মনকে সস্তি দেবে বিশেষ করে যাদের জঙ্গলে রাত কাটানোর অভিজ্ঞতা নেই তাদের জন্যতো অবশ্যই। কঠিন পরিস্থিতিতে সহজ-সরল ভাবে চিন্তা করলে একটা না একটা সমাধান বের করা যায়ই। হাতের সামনে যা পাবেন তা দিয়েই চট জলদি একটা ব্যবস্থা করে নিবেন। নিচে আমি কয়েকটা উদাহারন দিলাম-
উদাহারন-১
প্রথমে ঠিক করুন আপনার কতটুকু জায়গা লাগবে। এখন আপনি ৪/৫ ফুট আকারে সোজা কয়েকটি ডাল কাটুন। ৬টি ডাল দিয়ে ক্যামেরার ট্রাইপডের আকারে ২টি ট্রাইপড তৈরী করুন। এখন ট্রাইপড ২টি পাশাপাশি রাখুন এবং ট্রাইপড ২টির উপর আড়াআড়ি ভাবে আরেকটি সোজা ডাল রাখুন। ব্যাস, আপনার কুঁড়ের কাঠামোটি তৈরী হয়ে গেলো। এখন ছাদ তৈরীর জন্য আপনি যে দিকে মুখ কওে শোবেন তার উল্টো পাশে কাঠামোর মাথা থেকে মাটি পর্যন্ত কৌণিক আকারে এক সারি ডাল পাশাপাশি বসিয়ে দিন ও বৃষ্টি ঠেকানো জন্য পুরো ছাদে পাতা বিছিয়ে দিন কুড়ের মেঝেতেও পাতা ব্যবহার করতে পারেন তোশোক হিসাবে। সব মিলিয়ে আপনি একটি কুঁড়ে তৈরী করে ফেললেন।
উদাহারন-২
৮/১০ ফুট আকারে ২০/৩০ টি সোজা ডাল কেটে আনুন ও সমস্ত ডালগুলোকে একত্র করে ডালগুলোর এক মাথা দড়ি দিয়ে হালকা করে বাঁধুন। এখন ডাল গুলোর দড়ি বাধা দিকটা উপরে রেখে নিচের খোলা ডাল গুলোকে মাটিতে চার দিকে ছরিয়ে দিন এতে কওে আপনি যে কাঠামোটা পেলেন তা অনেকটা মাছ ধরার মোচার আকৃতির। আপনি আপনার সুবিধা মত মোচার ফাঁক গুলোকে কম বেশ করে নিতে পারেন। কাঠামোটিকে আরও শক্ত-পোক্ত করতে চাইলে আপনি দড়ি বা লতা ব্যবহার করে অথবা গাছের নরম ছাল ব্যবহার করে ডালগুলো একটার সাথে আরেকটা বেঁধে দিতে পারেন। এখানেও বৃষ্টি আটকাতে কাঠামোটিকে নানা রকম পাতা দিয়ে ঢেেক দিতে পারেন। তোশোক হিসাবে গাছের শুনো পাতা ব্যবহার করতে পারেন।
উদাহারন-৩
অনেক সময় জঙ্গল নিজে থেকেই কিছু আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে রাখে। আপনাকে শুধু সেগুলো চিনে নিতে হবে। তাতে আপনার পরিশ্রম অনেকটাই কমে যাবে। হয়তো বা দেখবেন এক সারি গাছ এমন ভাবে একটার উপর আরেকটা জন্মেছে যে গাছ গুলোর নিচে একটা গুহা মত সৃষ্টি হয়েছে। শুধু একটা মুখ আটকে দিন আর ভেতরটা পরিষ্কার কওে নিন। ব্যাস, আপনি একটা থাকার জায়গা পেয়ে গেলেন। তবে একটা কথা, যদি কোন কারনে আপনাকে গাছে রাত কাটাতে হয় তবে নিজেকে গাছের সাথে বেঁধে নিতে ভুলবেন না যেন কারন আপনার নিজের সুরক্ষা সবার আগে।
উদাহারন-৪
আপনি এমন চারটি গাছ বেছে নিন যারা একটি কাল্পনকি র্বগক্ষত্রে তরৈি করছে,ে তাতে দড়ি ও ডাল পালার সাহায্যে মাচা তৈরী করতে পারেন যদি আপনাকে কোন কারনে মাটি থেকে কিছুটা উপরে আশ্রয় নিতে হয়। এটা বানানো খুব একটা কঠিন না। আপনার মাচাটা হবে অনেকটা মই আকৃতির। যদি আপনি একটা মই বানাতে পারেন তবে এটা বানানোও আপনার পক্ষে সহজ হবে। তবে এর সমস্ত শক্তি ধরে রাখবে আপনার দড়ির গিঁট। তাই আপনাকে শক্ত ভাবে মাচা টিকে বাঁধতে হবে।
চলবে

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন